STROKE - A BRIEF DISCUSSION / স্ট্রোক কি ? কিভাবে বাঁচবেন । হঠাৎ স্ট্রোক হলে কি করবেন ।

স্ট্রোক কি ? কিভাবে বাঁচবেন 
হঠাৎ স্ট্রোক হলে কি করবেন 

প্রথমেই  যে প্রশ্ন মনে জাগে তা হল 'স্ট্রোক অসুখটা কি ' এবং তা মানুষের বা সমাজের কাছে কতটা গুরুত্ত্বপূর্ণ ।সহজভাবে বলতে গেলে এটা মূলতঃ মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাতজনিত একটি অসংক্রামক রোগ। যার চলতি নাম "Brain Attack" বা স্ট্রোক।হার্ট এটাক এর মতো এই রোগেও দ্রুত এবং জরুরি চিকিৎসা দরকার ।যখন মস্তিষ্কের একটা বিরাট অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় তখন স্ট্রোকের ভয়াবহতা বেড়ে যায়। স্ট্রোকের লক্ষ্মণগুলি খুব বিচিত্র ও বিক্ষিপ্ত। Heart Attack এর মতো একরকম হয় না। যদিও স্ট্রোক মস্তিষ্কের অসুখ,তার লক্ষনগুলোর সাথে মাথার সম্পর্ক বেশিরভাগ সময় থাকে না যে জন্যে সাধারণের কাছে সহজে ধরা পড়ে না। তার কারণ হল মস্তিষ্কে যে জায়গার রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়, তার কর্মহীনতার প্রকাশ হবে স্ট্রোকের লক্ষন বা উপসর্গে।যেহেতু মস্তিষ্কের বিভিন্ন জায়গার কাজ আলাদা, যেমন -হাত -পা সঞ্চালন করা,শরীরের নানা অংশের অনুভূতি পাওয়া,সজাগ থাকা ,কথা-বলার ক্ষমতা ,বুদ্ধি ,প্রতিভা ইত্যাদি। সেই মতো স্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে Paralysis (পক্ষাঘাত),অজ্ঞান হওয়া ,স্মৃতিশক্তি হারানো,কথা বন্ধ হয়ে যাওয়া কিংবা বুদ্ধিহীনতা।

দ্বিতীয় প্রশ্ন হল স্ট্রোক কয় প্রকার?
স্ট্রোক মূলতঃ দুধরণের - (ক) Ischemic Stroke বা Cerebral Thrombosis এবং (খ) Haemorragic Stroke (মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ )


ISCHEMIC STROKE- এই সব ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীতে রক্ত জমে যায়,ফলে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়। হার্ট (Heart) থেকে মোট চারটি ধমনী ঘাড়ের / গলার (Neck) মধ্যে দিয়ে মাথার ভেতর প্রবেশ করে,পরে অনেক অংশে বিভক্ত হয়। মূলতঃ এই ধমনীর ভেতরে রক্ত জমাট বাঁধলে (Clot formation) স্ট্রোক হয় । কারণ মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষ (Brain Cell) অক্সিজেন ও glucose থেকে বঞ্চিত হয়।যেহেতু এই স্নায়ু কোষগুলি অক্সিজেন ও glucose ছাড়া  একদম কাজ করতে পারে না , তাই তাদের কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় ফলে স্ট্রোকের উপসর্গ দেখা দেয়।

আবার এটা জানা দরকার উচ্চ রক্তচাপ (High Blood Pressure ),ধূমপান (Smoking ), রক্তে বেশি চর্বি (High fat /lipid  level ),ডায়াবেটিস প্রভৃতি কারনে ধমনীর ভিতরের দেওয়াল মোটা ও শক্ত হয়ে যায় (Artherosclerosis ) ফলে তার ছিদ্র (lumen ) সরু হয়ে যায়  এবং রক্ত জমাট বাধঁতে সাহায্য করে। এছাড়া বেশি বয়স এবং হার্টের অসুখের কারণেও স্ট্রোক হয়। অনেক সময় হার্টের ভেতর থেকে ছোট ছোট জমা রক্ত (Blood Clot ) ছিটকে গিয়ে মস্তিষ্কের ধমনীতে আটকে স্ট্রোক হতে পারে ,যাকে বলে Cerebral Embolism.

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ : মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণকে আমরা Cerebral Haemorrhage  বলেই জানি।বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপই এই ধরণের স্ট্রোকের কারণ এবং রক্তচাপ কমিয়ে রাখলে এই মারাত্মক ঝুঁকি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। haemorrhagic Stroke -এর আবার দুটো ভাগ আছে -মস্তিষ্কের ভিতরে রক্তক্ষরণ (Intra  Cerebral Haemorrhage ) ও মস্তিষ্কের আবরণের নীচে রক্তক্ষরণ (Sub Aracnoid Haemorrhage ) বা SAH .

উচ্চ রক্তচাপ ছাড়া আর যে যে কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় তারমধ্যে বংশগত রক্তক্ষরণের সাধারণ প্রবণতা ,ওষুধের প্রতিক্রিয়া , নেশা করা বা জন্মগত কারণে মস্তিস্ক দেয়ালের দুর্বলতা। সুতরাং এসব ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।



স্ট্রোকের  লক্ষণগুলি :
স্ট্রোকের উপসর্গগুলো নির্ভর করে মস্তিষ্কের কোন জায়গা আক্ৰান্ত এবং কি কারণে আক্ৰান্ত তার ওপর,তবে সাধারণভাবে লক্ষণগুলি 'হঠাৎ' শুরু হয় এরকমভাবে:

  • শরীরের একদিক,হাত,পা ও মুখ একসঙ্গে বা আলাদাভাবে হঠাৎ দুর্বল হওয়া বা সংবেদনশীলতার অভাব হওয়া 
  • কথা বলার গুণগত মানের হঠাৎ পরিবর্তন -যেমন কথার আড়ষ্টতা বা অসংলগ্ন কথা বা একেবারেই বাক্রুদ্ধতা 
  • মুখের একদিক বেঁকে যাওয়া বা হাঁটতে অসুবিধা হওয়া 
  • ক্রমশঃ নিস্তেজ হয়ে যাওয়া ও সংজ্ঞাহীন হয়ে যাওয়া 
  • হঠাৎ প্রবল মাথাব্যাথা ,বমি,ও অজ্ঞান হওয়া বা মৃগীর মতো খিঁচুনি হওয়া  


স্ট্রোকের লক্ষন ধরা পড়লে কি করণীয় :

যেহেতু স্ট্রোক খুব ভয়াবহ জরুরি ব্যাধি ,যত দ্রুত সম্ভব এর চিকিৎসা বাবস্থা করা দরকার।হয় সত্বর পারিবারিক চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে অথবা সে সুযোগ না থাকলে সঙ্গে সঙ্গে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। অযথা সময় নষ্ট করলে মস্তিষ্কের ক্ষতির পরিমাণ মারাত্মক হতে পারে ,এমনকি লক্ষন অল্প হলেও হালকা ভাবে নেয়া চলবে না।কারণ একটু পরে তা মারাত্মক স্ট্রোক এ পরিণত হতে পারে।বড়ো স্ট্রোকের ক্ষেত্রে রোগী মারা যেতে পারে বা পঙ্গু হতে পারেন।আধুনিক চিকিৎসায় এই ক্ষতি অনেকাংশে আটকানো সম্ভব যদি খুব তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করা যায়।Ischemic Stroke -এর ক্ষেত্রে ৩ ঘন্টার মধ্যে এক বিশেষ চিকিৎসার সাহায্যে খুব দ্রুত রোগীকে স্বাভাবিক করে দেয়া যায় ।


কৌশিক সাধুখাঁ  (মোবাইল) ৯৮৩০৪৩৯৮৭৮







Comments

Popular posts from this blog

Medicine for weight gain, which is safe. /মোটা হওয়ার ওষুধ, কোনটি সঠিক জেনে নিন।

FIRST AID - BASIC TIPS AND HOME REMEDIES

ACIDITY AND CONSTIPATION- EASY HOME REMEDIES অম্লপিত্ত ও কোষ্ঠকাঠিন্যের ঘরোয়া আয়ুর্বেদিক সমাধান